গোল্ড ফিশ মাছের বাচ্চার পরিচর্যার পদ্ধতি ( how to care of new born baby gold fish )

গোল্ড ফিশ মাছের বাচ্চা করা যতটা সহজ , মাছের বাচ্চা বাঁচানো টা কিন্তু বেশ কঠিন । আজ আমি গোল্ড ফিশ মাছের বাচ্চা কিভাবে বেশী পরিমানে বাঁচানো যায় সেই সম্বন্ধে আলোকপাত করবো। 





     

আপনারা দেখেছেন যে গোল্ড ফিশ মাছের বাচ্চা যতটা পরিমানে জন্মায় তার বেশ কিছুটা , এমন কি ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশ পর্যন্ত বাচ্চা মরে যায় । তবে একথা ঠিক যে আপনি যাই করুন না কেন ১০০ শতাংশ বাচ্চা বাঁচানো সম্ভব নয় । তবে সঠিক নিয়ম মেনে চলতে পারলে ৯০ শতাংশ বাচ্চা বাঁচানো সহজেই সম্ভব । এখন দেখে নেওয়া যাক কোন নিয়ম গুলি মেনে চললে গোল্ড ফিশ মাছের বাচ্চা বেশী পরিমানে বাঁচানো যায় ।



১) প্রথমেই আলোচনা করবো ব্রূডার মাছ বা ধাড়ি মাছ নিয়ে । বেশীরভাগ মানুষ প্রথমেই যে ভুলটি করে থাকেন তা হল মাছের পেটে ডিম এসেছে বুঝতে পারলেই সেই মাছ দিয়ে ডিম পাড়ানো শুরু করে দেন । কিন্তু এই ভুল করবেন না । মাছের ডিম পাড়াবার আগে ব্রূডার মাছের সঠিক সিলেক্সান করা খুব জরুরী । গোল্ড ফিশ মাছের ক্ষেত্রে মাছের বয়স হতে হবে ১ থেকে ৩ বছরের মধ্যে , এর কম বা বেশী হলে মাছের ডিম ফুটে যে বাচ্চা বের হবে তা দুর্বল প্রকৃতির হবে । এই ধরনের বাচ্চার মারা যাবার সম্ভাবনাও অনেকটাই বেশী হবে । তাই সব থেকে ভাল হবে যদি আপনি ১ থেকে ৩ বছরের বয়সী মাছের ডিম ফোটান । 



যে মাছের ডিম আপনি ফোটাবেন তার সাস্থের দিকেও আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে । যেমন যে মাছের ডিম আপনি ফোটাবেন সেই মাছগুলি যেন যথেস্ট সাস্থবান হয় । মাছ ডিম পাড়লে মাছের শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে তাই ব্রূডার মাছের জন্য বেশী প্রোটিন যুক্ত খাবার খাওয়াবেন । একই মাছের ক্ষেত্রে ডিম পাড়াবার জন্য অন্তত ১৫ থেকে ২০ দিনের গ্যাপ দেবেন । এই গ্যাপ দিলে ডিম পাড়ার জন্য মাছ গুলি নিজেদের দুর্বলতা কাটিয়ে ওঠার সুযোগ পেয়ে যাবে । মনে রাখবেন সুস্থ মাছের বাচ্চা সাস্থবান হবে এবং এই বাচ্চার রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতাও বেশী হবে। বাচ্চা মারা যার সম্ভাবনাও কম হবে।



২)  মাছের ব্লাড লাইন ঃ মনে রাখবেন ভালো মানের সুস্থ সবল বাচ্চা পেতে হলে  ব্রূডার মাছের ব্লাড লাইন ব্যাপার টি খেয়াল রাখতে হবে । একই মাছের বংশানুক্রমিক ভাবে বাচ্চা তুলে গেলে বাচ্চা সুস্থ হয় না । যেমন মনে করুন এই মরসুমে যে ব্রূডার দিয়ে বাচ্চা তুললেন , পরের বার আবার ওই বাচ্চা বড় করে সেই মাছের বাচ্চা করালেন , আবার পরের বছর বাচ্চা মাছ রেখে দিয়ে বড় করে সেই মাছের বাচ্চা করালেন । এই ভাবে চলতে থাকলে প্রথম ১ ,২ বছর হয়তো কিছু বুঝতে পারবেন না কিন্তু তার পর থেকে মাছের বাচ্চা জিনগত ত্রুটি নিয়ে জন্মাবে বেশ কিছু হ্যান্ড ক্যাপ বাচ্চা হবে   ছে আপনি খালি চোখে কিছুই বুঝতে পারবেন না কিন্তু দেখবেন আগে যেভাবে মাছের বাচ্চা ফুটিয়ে বাঁচিয়ে রেখে বড় করতে পেরেছিলেন এখন সেই পদ্ধতি অবলম্বন করেও মাছের বাচ্চা মরে যাচ্ছে । এই ক্ষেত্রে আপনাকে যেটা করতে হবে তা হল মাঝে মধ্যে আপনাকে ব্রূডার বদল করতে হবে । অন্য কোন যায়গা থেকে কয়েকটি মাছ এনে আপনার ব্রূডার মাছের সঙ্গে ছেড়ে দিতে হবে , চেষ্টা করবেন এমন জায়গা থেকে মাছ সংগ্রহ করতে যেখানে আপনার বাড়ির তৈরি করা মাছ যায়নি । কখনো ছেলে মাছ বদল করবেন কখনো মেয়ে মাছ বদল করবেন এতে মাছের এক ব্লাড লাইন হবার সম্ভাবনা কম হবে । যারা শখ করে গোল্ড ফিশ মাছের বাচ্চা করবেন তারা এক দোকান থেকে ছেলে মাছ কিনবেন অন্য কোন মাছের দোকান থেকে মেয়ে মাছ কিনবেন । সম্ভব হলে দূটি দোকান দুই এলাকার হলে মাছের ব্লাড লাইন এক হবার চান্স কম হবে ।



৩) পপুলেশান ঃ পপুলেশান বা মাছের ঘনত্ব , মাছের বাচ্চা বেশী পরিমানে বাঁচাতে হলে এই দিকটি অবশ্যই খেয়াল রাখবেন । জলের পরিমান অনুপাতে মাছের বাচ্চা বেশী হলে মাছের বাচ্চা ফোটার পর বাচ্চা ভালোভাবে সাঁতার কাটতে পারার পর থেকে ২ থেকে ৩ তিন দিন পরে মাছের বাচ্চা আরো বড় যায়গায় সরিয়ে দেবেন না হলে মাছের বাচ্চা মরা শুরু হয়ে যাবে । 



এছাড়া মাছের বাচ্চা বাঁচিয়ে রাখার জন্য কি ধরনের জল লাগে বা তাপমাত্রা খাবার ইত্তাদি বিষয় গুলির জন্য আমার লেখা '' সহজে গোল্ড ফিশ মাছের বাচ্চা করার উপায় '' লেখাটি পড়ে নেবেন ।


Comments

Popular posts from this blog

গাপ্পি মাছ ( guppy fish )

অ্যাকুরিয়ামের মাছের অসুখ ( aquarium fish diseases)

মাছ কি খেতে ভালো বাসে / অ্যাকুরিয়ামের মাছ কি ধরনের খাবার সব থেকে পছন্দ করে ( aquarium fish food ) ?