ইনফিউজোরিয়া ( infusoria )

যারা অ্যাকুরিয়ামের মাছের বাচ্চা ফোটাতে চান তাদের কাছে ইনফিউজোরিয়া একটি খুব ভালো খাবার । এই ইনফিউজোরিয়া হল এক ধরনের খুবই ক্ষুদ্রাকার প্রানীকনা , যা কিনা এতই ছোট হয় যে খালি চোখে প্রায় দেখাই যায় না । যে সমস্ত মাছের বাচ্চা খুব ছোট সাইজের হয় , যারা ব্রাইন স্রীম্প এর বাচ্চা বা ডাফনিয়াও খেতে পারে না , তারা এই খাবার খুব সহজেই খেতে পারবে যেমন ফাইটার মাছের বাচ্চা , খুব ছোট জাতের টেট্রা মাছের বাচ্চা ইত্যাদি । এই খাবারের সব থেকে ভালো দিকটি হোল এই খাবার খুব সহজেই আপনি ঘরে বসে তৈরি করে নিতে পারবেন । এই খাবার তৈরি করার খরচ ও খুব কম এবং যে কোন মাছের বাচ্চাকে আপনি দিতে পারবেন । এই খাবারের ব্যাপারে একটি বিষয় অবশ্যই মনে রাখবেন তা হোল এই খাবার দেবার আগে খাবার শুঁখে দেখে নেবেন যেন খাবার থেকে খারাপ বা বদ গন্ধ আছে কিনা , যদি থাকে তাহলে ওই খাবার দেওয়া চলবে না । 


ইনফিউজোরিয়া তৈরি করার পদ্ধতি বা নিয়ম ঃ   এই খাবার আপনি যে কোন পাত্রে বানাতে পারেন , তা মাটির হোক বা কাঁচের বা প্লাস্টিকের । প্রতি ২ লিটার জল পিছু ২ চামচ মিল্ক পাউডার , একটি ছোট সাইজের পাকা কলার খোসা , অল্প কিছুটা খড় ( ওজনে ৫ থেকে ১০ গ্রাম ) , দু চারটে সবুজ শাকের পাতা ( পালং , সবুজ নটে , পুঁই শাক ইত্যাদি ) , আর অল্প একটু পুকুরের জল( ১ বা ২ চা চামচ ) এই সমস্ত জিনিস গুলি একসঙ্গে জলে দিয়ে পাত্রের মুখে একটি  চাপা দিয়ে রেখে দিতে হবে । ৮ থেকে ১০ দিন পরে থেকে জলের রং সবুজ হতে থাকবে । ১২ দিন পরে থেকে জলের পচা গন্ধ চলে গেলে ওই জল পরিমান মতন মাছের বাচ্চা কে দেওয়া যাবে ।  



মনে রাখবেন ঃ 


১) যে জলে ইনফিউজোরিয়া তৈরি করবেন সেই জল এর টি ডি এস যেন ৩০০ এর নিচে হয় ।



২) জলে যেন কোন রকম বিষাক্ত পদার্থ না থাকে ( ক্লোরিন ইত্যাদি ) ।



৩) যদি মাটির তলাকার জল হয় সে ক্ষেত্রে জল অন্তত ২ দিন বাসি করে নেবেন ।



৪) পাত্র টি এমন জায়গায় রাখুন জাতে সূর্যের আলো পড়ে ।



৫) পাত্রের মুখে দেওয়ার চাপা টি একটু ফাঁক করে রাখবেন যাতে হাওয়া চলাচল করতে পারে ।



৬) পুকুরের জল না পেলে তার পরিবর্তে অন্য একটি পাত্রে শুধু জল ৪৫ থেকে ৫০ দিন খোলা অবস্থায় রেখে দিন । তার পর ওই জল পুকুরের জলের পরিবর্তে ব্যাবহার করতে পারবেন । মনে রাখবেন জলের তাপমাত্রা যেন কোন ভাবেই ৩২ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড এর বেশি না হয় । 



৭) সব সময় হাতের কাছে খড় পাওয়া যায় না , তাই প্রয়োজন মতন খড় স্টক করে রাখবেন ।



৮) ইনফিউজোরিয়া তৈরি হবার পরে একটি চামচ দিয়ে পাত্রের একটু নিচ থেকে ইনফিউজোরিয়া নেবেন । একেবারে জলের উপরিভাগ থেকে নেবেন না ।



৯) ইনফিউজোরিয়া খেতে দেবার আগে ১০০ শতাংশ নিশ্চিত হয়ে নেবেন যে তাতে কোন রকম খারাপ গন্ধ আছে কিনা । যদি থাকে তাহলে আরো ১ থেকে ২ দিন অপেক্ষা করবেন , দেখবেন গন্ধ চলে যাবে । তার পর খেতে দেওয়া যাবে ।



১০) ১২ দিন পরেও যদি জল থেকে গন্ধ না যায় তাহলে একটি চামচ বা কাঠি দিয়ে দিনে ১ বার করে ঘেঁটে দেবেন ।



১১) মনে রাখবেন জলে ইনফিউজোরিয়া জন্মালে তা সবুজ রঙ ধারন করে , অন্য কোন রঙ হয় না ।



১২) ইনফিউজোরিয়া তৈরি করতে বসাবার সাথে সাথে পাত্রের মুখটি একটি মশারির নেট দিয়ে আটকে দিন । কারন পাত্রের মুখ খোলা থাকলে মশা ডিম পেড়ে দেবে ।মশা ডিম পেড়ে দিলে ওই জলে যে ইনফিউজোরিয়া হবে তা খাওয়ালে মাছের বাচ্চা মরে যাবার চান্স ৯০ শতাংশ ।

Comments

Popular posts from this blog

গাপ্পি মাছ ( guppy fish )

অ্যাকুরিয়ামের মাছের অসুখ ( aquarium fish diseases)

মাছ কি খেতে ভালো বাসে / অ্যাকুরিয়ামের মাছ কি ধরনের খাবার সব থেকে পছন্দ করে ( aquarium fish food ) ?