অ্যাকুরিয়াম ফিল্টার ( aquarium filter )
অ্যাকুরিয়ামে মাছ ভালো ভাবে রাখতে হলে , যে জিনিস টি সবার আগে প্রয়োজন সেটি হল একটি ফিল্টার । এই ফিল্টার টি কে অ্যাকুরিয়ামের লাইফ লাইন ও বলা যায় । অ্যাকুরিয়ামের মাছের ভালো থাকা , সুস্থ থাকা , বৃদ্ধি হওয়া এর সমস্ত টাই নির্ভর করে অ্যাকুরিয়ামের ফিল্টারের উপর । একটি অ্যাকুরিয়াম ফিল্টার দুই ধরনের কাজ করে , প্রথমত অ্যাকুরিয়ামের জল পরিস্কার রাখে দ্বিতীয়ত জলে অক্সিজেনের সরবরাহ ঠিক রাখে ।
এখন দেখে নেওয়া যাক অ্যাকুরিয়ামের ফিল্টার কত ধরনের হয় ।
আন্ডার গ্র্যাভেল ফিল্টার বা গ্রাউন্ড ফিল্টার ঃ
অ্যাকুরিয়ামের প্রথম দিকে এই ফিল্টার আবিস্কার হয় , খুবই কার্যকর এই ফিল্টার , অ্যাকুরিয়ামের আদি কাল থেকে বর্তমান যুগেও এই ফিল্টার সমান জনপ্রিয় । এই ফিল্টার অ্যাকুরিয়ামের নিচে পাততে হয় , এবং এর উপরে গ্র্যাভেলস চাপা দিতে হয় তাই এই ফিল্টারের নাম আন্ডার গ্র্যাভেলস ফিল্টার
আন্ডার গ্র্যাভেলস ফিল্টারের সুবিধা এবং অসুবিধা গুলি কি কি ? ( advantage & disadvantage of under gravel filter ) ?
সুবিধা ( advantage ) ঃ
১) অ্যাকুরিয়ামে এই ফিল্টার ব্যাবহার করলে অ্যাকুরিয়ামের মধ্যে উপকারি ব্যাক্টেরিয়া খুব ভালো জন্মায় , তাই অ্যাকুরিয়ামের জল খুব ভালো পরিস্কার থাকে ।
২) অ্যাকুরিয়ামে এই ফিল্টার ব্যাবহার করলে অ্যাকুরিয়ামের জলে স্রোত কম থাকে ফলে যে সমস্ত মাছ গুলি জলের স্রোত পছন্দ করে না , সেই সব মাছ গুলি যেমন গাপ্পি , নিওন টেট্রা , গোরামি প্রভৃতি মাছ গুলি খুব ভালো ভাবে রাখা যায় ।
৩) এই ফিল্টারের এয়ার লিফট পাইপ প্রয়োজন মতন ছোট বড় করা যায় তাই মাছের ঠাণ্ডা লাগা সহজেই প্রতিরোধ করা সম্ভব হয় ।
অসুবিধা ( dis advantage )ঃ
১) যে সমস্ত অ্যাকুরিয়ামে গ্র্যাভেলস দেওয়া হয় না , সেখানে এই ফিল্টার বসানো সম্ভব হবে না ।
অসুবিধা ( dis advantage )ঃ
১) যে সমস্ত অ্যাকুরিয়ামে গ্র্যাভেলস দেওয়া হয় না , সেখানে এই ফিল্টার বসানো সম্ভব হবে না ।
২) এই ফিল্টার পরিস্কার করা যথেস্ট সময় সাপেক্ষ , এই ফিল্টার পরিস্কার করতে হলে অ্যাকুরিয়ামের গ্র্যাভেলস তুলে , তারপর এই ফিল্টার পরিস্কার করতে হয় ।
৩) এই ফিল্টার এর ভিতরে কতটা ময়লা জমেছে বাইরে থেকে বোঝা সম্ভব হয় না ।
৪) অ্যাকুরিয়ামে বেশি পরিমান মাছ রাখতে হলে এই ফিল্টার যথেস্ট নয় ।
৫) এই ফিল্টার চালাতে গেলে একটি এয়ার পাম্পের প্রয়োজন হয় , এয়ার পাম্পের আওয়াজে রাত্রি বেলা ঘুমাতে অসুবিধা হতে পারে ।
২) কর্নার ফিল্টার ( corner filter ) ঃ
কম দামের মধ্যে কর্নার ফিল্টার একটি ভালো ফিল্টার । অ্যাকুরিয়ামে এই ফিল্টার ব্যাবহার করে ভালোভাবেই মাছ রাখা সম্ভব । এই ফিল্টারের মধ্যে ফিল্টার মিডিয়া হিসাবে সিন্থেটিক তুলো ব্যাবুহার করা হয়ে থাকে তাই এই ফিল্টার কে অনেকে তুলো ফিল্টারও বলে থাকেন । এই ফিল্টারেরও কিছু সুবিধা এবং অসুবিধা আছে ।
সুবিধা ( advantage ) ঃ
১) এই ফিল্টার খুব সহজে পরিস্কার করা যায় ।
২) এই ফিল্টারের বডি সচ্ছ প্লাস্টিক বা ফাইবার দিয়ে তৈরি করা হয় তাই বাইরে থেকে এই ফিল্টারের ভিতরে কতটা ময়লা জমেছে তা সহজেই বোঝা যায় ।
৩) দাম কম ।
অসুবিধা ( dis advantage ) ঃ
১) দেখতে খুব ভালো নয় ।
২) অ্যাকুরিয়ামের অনেকটা জায়গা দখল করে থাকে ।
৩) বার বার ফিল্টারের তুলো পাল্টাবার ঝামেলা আছে ।
৪) অ্যাকুরিয়ামে বেশী মাছ রাখলে এই ফিল্টার যথেস্ট নয় ।
৩) বায়ো স্পঞ্জ ফিল্টার ( bio sponge filter ) ঃ
এই ফিল্টারটি আবিস্কার হবার পরে থেকে যে সমস্ত অ্যাকুরিয়ামের নিচে কোন গ্র্যাভেলস দেওয়া হয় না , সেই সব অ্যাকুরিয়ামের জন্য খুব কার্যকরি ফিল্টার , এছাড়া কর্নার ফিল্টারের উন্নত সংস্করণ হিসাবে যে কোন অ্যাকুরিয়ামে এই স্পঞ্জ ফিল্টার ব্যাবহার করা যায় । হস্পিটাল ট্যাঙ্ক এ ব্যাবহার করার জন্য এক মাত্র ফিল্টার । তবে এই ফিল্টারেরও কিছু সুবিধা এবং অসুবিধা আছে ।
সুবিধা ( advantage ) ঃ
১) সহজে পরিস্কার করা যায় ।
২) অ্যাকুরিয়ামের মধ্যে সুবিধা মতন যে কোন যায়গায় বসানো যায় ।
৩) এই ফিল্টারে ব্যাক্টেরিয়া খুব ভালো জন্মায় ।
৪) হস্পিটাল অ্যাকুরিয়ামের জন্য আদর্শ ।
৫) এই ফিল্টারের জন্য বাড়তি কোন মেন্টেনেন্স খরচ নেই ।
অসুবিধা ( dis advantage ) ঃ
১) এই ফিল্টারের ফিল্টার মিডিয়া অর্থাৎ বায়ো স্পঞ্জ টি অ্যাকুরিয়ামের জলের সাথে সরাসরি যুক্ত থাকে , তাই এই অ্যাকুরিয়ামে এই ফিল্টার ব্যাবহার করা হলে , কোন কারনে অ্যাকুরিয়ামে খাবার কম দিলে মাছেরা স্পঞ্জ এর গায়ে ঠোকরাতে থাকে , এর ফলে স্পঞ্জ এর গায়ে জন্মানো উপকারি ব্যাক্টেরিয়া গুলি ক্ষতি গ্রস্থ হতে পারে ।
৪) পাওয়ার ফিল্টার বা ইন্টারনাল পাওয়ার ফিল্টার ( internal power filter ) ঃ
বর্তমানে সব থেকে জনপ্রিয় ফিল্টার । খুব দ্রুত জল পরিস্কারের জন্য এই ফিল্টার এর দক্ষতা অসামান্য । বর্তমানে খুব ই কম দামে বিভিন্ন ভালো ভাল কোম্পানির পাওয়ার ফিল্টার কিনতে পাওয়া যায় । এই ফিল্টার বিভিন্ন সাইজের এবং বিভিন্ন ক্ষ্মতা সম্পন্ন পাওয়া যায় , তাই আপনি আপনার অ্যাকুরিয়ামের প্রয়োজন মতন পাওয়ার ফিল্টার সহজেই অ্যাকুরিয়ামের দোকান গুলি থেকে কিনতে পেয়ে যাবেন । এই ফিল্টারেরও বিভিন্ন সুবিধার সঙ্গে কিছু অসুবিধাও আছে , দেখে নিন এই ফিল্টারের সুবিধা এবং অসুবিধা গুলি ।
সুবিধা ( advantage ) ঃ
১) খুব দ্রুত জল পরিস্কার করার ক্ষমতা আছে ।
২) এই ফিল্টার চালালে অ্যাকুরিয়ামের জলে স্রোত সৃষ্টি হয় , তাই যে সমস্ত অ্যাকুরিয়ামের মাছ জলের স্রোত পছন্দ করে তাদের জন্য এই ফিল্টার আদর্শ .
৩) এই ফিল্টারের ফিল্টার মিডিয়া একটি প্লাস্টিকের বক্সের মধ্যে থাকে তাই কোন মাছ এই ফিল্টারের উপকারি ব্যাক্টেরিয়া গুলি নস্ট করতে পারে না ।
৪) এই ফিল্টার পরিস্কার করা খুব সহজ এবং খুব অল্প সময়ের মধ্যে পরিস্কার করা যায় ।
৫) অ্যাকুরিয়ামে এই ফিল্টার ব্যাবহারে কোন আওয়াজ হয় না ।
৬) এই ফিল্টারের সব থেকে বড় সুবিধা হল , যেহেতু এই ফিল্টারের জল সারকুলেসান এর পরিমান বেশি হয় তাই অ্যাকুরিয়ামে বেশি পরিমান মাছ রাখতে হলে এই ফিল্টার লাগবেই ।
অসুবিধা ( dis advantage ) ঃ
১) সব ধরনের মাছের জন্য এই ফিল্টার ব্যাবহার করা যায় না । কারন সব জাতের মাছ জলের স্রোত পছন্দ করে না ।
২) এই ফিল্টার নিয়ম করে পরিস্কার করতে হয় , না হলে এই ফিল্টারের মুখ থেকে জলের স্রোতের সাথে যে বাতাস বের হয় তার পরিমান কমে যায় বা বন্ধ হয়ে যায় ।
৫) ওভার হেড ফিল্টার বা টপ ফিল্টার ( top filter ) ঃ
এই ফিল্টার পাওয়ার ফিল্টারের একটি উন্নত সংস্করণ । পাওয়ার ফিল্টারের অসুবিধা গুলি এই ফিল্টারের নেই । এই ফিল্টার ব্যাবহার করার অনেক সুবিধা আছে তবে দু একটি অসুবিধাও আছে দেখে নিন এই ফিল্টারের সুবিধা এবং অসুবিধা গুলি ।
সুবিধা ( advantage ) ঃ
১) আপনি চাইলে এই ফিল্টারের স্রোত বন্ধ করে দিতে পারেন , এক্ষেত্রে ফিল্টারের পরিস্রূত জল ফিল্টার বক্সের ভিতর দিয়ে অ্যাকুরিয়ামের উপর থেকে পড়বে ফলে জলে খুব একটা স্রোত হবে না । যে সমস্ত মাছ গুলি জলের স্রোত পছন্দ করে না সেই সমস্ত মাছ গুলিও আপনি ভালো ভাবে রাখতে পারবেন । আবার আপনি চাইলে পরিস্রূত জলের সঙ্গে জলের ভিতরে স্রোতও চালাতে পারবেন ।
২) কোন আওয়াজ হয় না ।
৩) খুব অল্প সময়ের মধ্যে পরিস্কার করা যায় ।
৪) ফিল্টারের মধ্যে ময়লা বেশি জমে গেলেও জলের ভিতরে অক্সিজেন সরবরাহ ঠিক থাকে ।
৫) এই ফিল্টারের ফিল্টার বক্সের ভিতরে সিন্থেটিক কটন প্যাড ছাড়াও , সেরামিক রিং , বায়োবল ইত্যাদি ব্যাবহার করে মেকানিকাল ফিল্ট্রেসান সিস্টেম তৈরি করে নিতে পারবেন আবার অ্যাক্টিভেটেড কার্বন , জিওলাইট্ , ম্যানফ্যান্সিস্টোন প্রভৃতি ব্যাবহার করে কেমিক্যাল ফিল্ট্রেসান সিস্টেম সহজেই করে নিতে পারবেন । এই ভাবে অনেক বেশি পরিস্রূত জল আপনি পেতে পারেন ।
অসুবিধা ( dis advantage ) ঃ
১) এই ফিটারের একটিই অসুবিধা যেটা হল এই ফিল্টারের ফিল্টার বক্স টি অ্যাকুরিয়ামের উপরে বসাতে হয় , তাই এই ফিল্টার ব্যাবহার করতে হলে , অ্যাকুরিয়ামের উপরে দু টি সরু সরু কাঁচের টুকরো বসিয়ে নিতে হয় , যে কাঁচের টুকরো দুটির উপরে এই ফিল্টার এর ফিল্টার বক্সটি বসানো যাবে । এই অ্যাকুরিয়ামের জন্য অ্যাকুরিয়ামের ঢাকনা টিও একটু উঁচু মাপের করতে হবে ।
৬) হ্যাং অন ফিল্টার ( hang on filter ) ঃ
এই ফিল্টার অ্যাকুরিয়ামের কাঁচের দেওয়ালের বাইরের দিকে ঝোলান অবস্থায় থাকে , তাই এই ফিল্টার কে হ্যাং অন ফিল্টার বলা হয় । এই ফিল্টার খুব ম্রিদু স্রোত যুক্ত একটি উন্নত মানের ফিল্টার । এই ফিল্টার প্ল্যান্টেড অ্যাকুরিয়ামের জন্য বিশেষ ভাবে তৈরি । দেখে নিন এই ফিল্টারের সুবিধা এবং অসুবিধা গুলি ।
সুবিধা ( advantage ) ঃ
১) প্ল্যান্টেড অ্যাকুরিরিয়ামের জন্য সব থেকে ভালো ফিল্টার ।
২) কোন আওয়াজ হয় না ।
৩) সহজেই পরিস্কার করা যায় ।
অসুবিধা ( dis advantage ) ঃ
১) এই ফিল্টারের এক টাই অসুবিধা , সেটা হল এই ফিল্টার লাগালে অ্যাকুরিয়ামের ঢাকনা বসানো যায় না । অ্যাকুরিয়াম খোলা রাখতে হয় ।
৭) ক্যানেস্টার ফিল্টার ( canestar filter ) ঃ
সব থেকে আধুনিক ফিল্টার , অ্যাকুরিয়ামে এই ধরনের ফিল্টার লাগান হলে অ্যাকুরিয়ামের জল দীর্ঘ দিন ভালো থাকে । যাদের হাতে অ্যাকুরিয়াম পরিস্কার করার সময় কম , তারা সচ্ছন্দে অ্যাকুরিয়ামে এই ফিল্টার ব্যাবহার করতে পারেন । একবার নজর চালিয়ে নিন এই ফিল্টারের সুবিধা এবং অসুবিধা গুলির উপর ।
সুবিধা ( advantage ) ঃ
১) অ্যাকুরিয়ামে এই ধরনের ফিল্টার লাগান হলে অ্যাকুরিয়ামের ভিতরে অন্যান্য ফিল্টারের মতন কোন জায়গা নস্ট হয় না , কারন এই ফিল্টার টি অ্যাকুরিয়ামের বাইরে বসানো হয় , শুধু দুটি পাইপের মুখ জলে ডোবানো থাকে একটি পাইপ দিয়ে জল ফিল্টারের মধ্যে যায় এবং অন্য পাইপ দিয়ে ফিল্টার থেকে পরিস্রূত জল অ্যাকুরিয়ামে প্রবেশ করে ।
২) এই ফিল্টার কে আপনি বায়ো ফিল্টার , মেকানিক্যাল ফিল্টার , কেমিক্যাল ফিল্টার যে কোন ভাবে ব্যাবহার করতে পারেন ,এমনকি এক সাথে বায়ো কেমিক্যাল ফিল্টারও করে নিতে পারবেন , এই ফিল্টারের ভিতরে প্রয়োজন মতন ফিল্টার মিডিয়া ব্যাবহার করে ।
৩) এই ফিল্টার চালালে কোন রকম আওয়াজ বা শব্দ হয় না ।
৪) এই ফিল্টার পরিস্কার না করেও দীর্ঘ দিন অ্যাকুরিয়ামের জল পরিস্কার রাখে ।
৫) বর্তমানে এই ধরনের ফিল্টার আলট্রা ভায়োলেট লাইট সমেতও পাওয়া যাচ্ছে , এর ফলে আরো পরিস্রূত জল পাওয়া সম্ভব হয়ে গেছে ।
অসুবিধা( ্dis advantage ) ঃ
১) এই ফিল্টার অ্যাকুরিয়ামের বাইরে রাখতে হয় , তাই রাখার জায়গার সমস্যা হতে পারে ।
৮) সাম্প ফিল্টার ( sump filter ) ঃ
এটি একটি আধুনিক বিজ্ঞান সন্মত ফিল্ট্রেসান সিস্টেম । এই ফিল্টার রেডিমেড কিনতে পাওয়া যায় না । অ্যাকুরিয়ামের প্রয়োজন মতন সাইজের এই ফিল্টার তৈরি করিয়ে নিতে হয় । এই ফিল্টার কাঁচ দিয়ে তৈরি করতে হয় । মনে রাখবেন এই ফিল্টার এমন কাউকে দিয়ে বানাবেন যার এই ফিল্টার সম্বন্ধে যথেস্ট অভিজ্ঞতা আছে । খুব বড় কোন অ্যাকুরিয়ামের জন্য বা খুব ভালো জলের জন্য এই ফিল্টার ব্যাবহার করা হয় । বিশেষ করে মেরিন অ্যাকুরিয়ামের জন্য এই ফিল্টার ব্যাবহার করা হয় । এই ধরনের ফিল্টার ক্যানেস্টার ফিল্টারের থেকেও আরো উন্নত ভাবে তৈরি করা যায় । আপনার প্রয়োজন মতন যখন তখন এই ফিল্টারকে বায়ো ফিল্টার , মেকানিক্যাল ফিল্টার , কেমিক্যাল ফিল্টারে পরিবর্তন করা যায় ।
When the state makes use of playing to collect revenue from a vulnerable inhabitants, it's not appearing in good religion in the direction of|in course of} 카지노사이트 the residents it is to serve. You can choose the best Bitcoin on line casino by conducting analysis and seeing which options are available. It is essential to see reviews, the particular bonuses on supply, and how quickly they deal with deposits and withdrawals.
ReplyDelete