মিষ্টি জল ( fresh water )
জলের অপর নাম জীবন একথা সকলেই জানেন । জল ছাড়া কোন প্রানিই বেঁচে থাকতে পারে না । অ্যাকুরিয়ামের মাছ ও এর অন্যথা নয় । অ্যাকুরিয়ামের মাছেদের প্রথমেই ৩ টি ভাগে ভাগ করা যায় । ১ম ভাগ হল যারা মিষ্টি জলের মাছ , ২য় ভাগ হল যারা নোনা জলে অর্থাৎ সমুদ্রের জলে থাকে , ৩য় ভাগে আছে সেই সমস্ত মাছ গুলি যারা এমন জলে থাকে যেটা একেবারে মিষ্টিও নয় আবার পুরো পুরি নোনতাও নয় । আজ এখানে আলোচনা করবো মিষ্টি জল নিয়ে ।
১) মিষ্টি জল বা মিঠে জল ঃ পৃথিবীতে নদী , ঝর্না , হ্রদ ( নোনা জলের হ্রদ বাদে ) খাল , বিল ,পুকুর ,দীঘি ,এছাড়া মাটির তলার জল অর্থাৎ মাটি খুঁড়ে বা নল কূপের মাধ্যমে যে জল পাওয়া যায় এবং বৃষ্টির জল হল মিষ্টি জলের ভাণ্ডার । এই মিষ্টি জল কে আবার ২ ভাগে ভাগ করা যায় , ১ম টি হল সফট জল অর্থাৎ যে জলের হার্ড নেস ০ থেকে ১০০ মিলি গ্রাম / লিটার । ২য় প্রকার হল হার্ড জল অর্থাৎ যে জলের হার্ড নেস ১০১ থেকে ২৫০ মিলি গ্রাম / লিটার এবং এর থেকেও বেশি । এই হার্ড জলকেও আবার ২ ভাগে ভাগ করা যায় , মৃদু হার্ড ( যে জলের হার্ড নেস ১০১ থেকে ১৫০ মিলি গ্রাম / লিটার ) , এবং বেশি হার্ড ( যে জলের হার্ড নেস ১৫১ থেকে ২৫০ মিলিগ্রাম /লিটার এবং এর থেকেও বেশি ) ।
আমরা আমাদের চার
পাশে যে সমস্ত মিষ্টি জল দেখতে পাই তার মধ্যে কিছু জলের হার্ডনেস কম আবার কিছু
জলের হার্ডনেস বেসি । মিষ্টি জলে থাকা মাছ গুলি তাদের নিজস্ব প্রকৃতি অনুযায়ী
বিভিন্ন ধরনের হার্ডনেসের জল পছন্দ করে । আপনি
যখন মাছ পুষতে শুরু করবেন তার আগে
দেখে নিতে ভুলবেন না , যে আপনি যে মাছ গুলি অ্যাকুরিয়ামে পোষার জন্য মনস্থির
করেছেন সেই মাছ গুলি কেমন ধরনের হার্ডনেসের জলে থাকে । সাধারনত আমরা অ্যাকুরিয়ামে এক সঙ্গে অনেক রকমের
মাছ রাখতে ভালো বাসি , কিন্তু মাছ ছাড়ার আগে সেই সমস্ত মাছ গুলি ঐ একই হার্ডনেসের
জলে থাকতে পারবে কিনা দেখে নিতে ভুলবেন না । যদি আপনি কম হার্ডনেসের জলে থাকা মাছ
গুলি কে বেশি হার্ডনেসের জলে রাখেন বা বেসি হার্ডনেসের জলে থাকা মাছ গুলিকে কম
হার্ডনেসের জলে রাখেন তাহলে মাছ তার নিজের স্বাভাবিক পরিবেশ পাবে না । এর ফলে
মাছের শারীরিক এবং মানসিক পরিস্থিতি নষ্ট হয়ে যেতে পারে। হ্যাঁ ঠিকই পড়েছেন মাছের
মানসিক পরিস্থিতি, মাছ কে তার বিরুদ্ধ পরিবেশে রাখলে মাছের মানসিক স্থিতি নষ্ট হয়ে
যায় । মাছ পাগলের মত আচরন করতে থাকে , মাছ খাওয়া কমিয়ে দেয় বা অনেক সময় খাওয়া
একেবারেই বন্ধ করে দেয়, অন্য মাছ কে কামড়াতে শুরু করে , এদিক ওদিক বিক্ষিপ্ত ভাবে
ছোটা ছুটি করতে থাকে। শারীরিক পরিস্থিতি খারাপ হলে দেখবেন মাছ আস্তে আস্তে বড়ো
হবার বদলে সাইজে ছোট হয়ে যাচ্ছে ,রোগা হয়ে যাচ্ছে । এই
ভাবে চলতে চলতে এক সময় মাছ গুলি মারা যায় ।
মনে রাখবেন ঃ
১) সব থেকে কম
হার্ডনেসের জল পাওয়া যায় বৃষ্টির জল থেকে ( হার্ডনেস ০ থেকে ১০ ) ।
২) নদির জলের
হার্ডনেস সাধারনত ৫০ থেকে ১০০ মিলিগ্রাম / লিটার ।
৩) পুকুরের
জলের হার্ডনেস সাধারনত ৫০ থেকে ১০০ মিলিগ্রাম / লিটার হয়ে থাকে ।
৪) নলকূপের
জল অঞ্চল ভেদে এক এক জায়গায় এক এক রকম হয়ে থাকে । অ্যাকুরিয়ামে জল ব্যাবহারের আগে জলের
হার্ডনেস পরীক্ষা করে নেবেন ।
৫) হার্ড জল
থেকে সফট জল পেতে হলে R . O. ফিল্টারের জল ব্যাবহার করতে হবে । বর্তমানে বাজারে অনেক কোম্পানির R. O.ফিল্টার কিনতে পাওয়া যায় , যেগুলি আপনাদের বাড়িতে পানীয় জলের জন্য
ব্যাবহার করে থাকেন । এছাড়া কোন ওষুধের মাধ্যমে হার্ড জলকে
সফট জলে পরিবর্তন করতে পারবেন না ।
৬) সফট জলকে
আপনি সহজেই হার্ড জলে রূপান্তর করতে পারবেন । খাবার নুন , সন্ধক নুন , অ্যাকুরিয়াম নুন , চুন , খাবার সোডা , খুব অল্প পরিমানে জলে গুলে আপনি সহজেই
জলের হার্ডনেস বাড়িয়ে নিতে পারবেন। জলের হার্ডনেস
মাপার মিটার মেপে নিয়ে জলের হার্ডনেস প্রয়োজন মত তৈরি করে নিতে পারবেন । মনে রাখবেন জলের হার্ডনেস বাড়িয়ে সাথে
সাথে মাছ ছাড়বেন না , জলের হার্ডনেস
বাড়াবার পরে অন্তত ৪৮ ঘন্টা পর টি ডি এস মিটার দিয়ে জলের হার্ডনেস আরো একবার মেপে দেখে
নেবেন , কারন হার্ডনেস বাড়াবার উপাদান গুলি জলে মেশাবার পরে ৪৮ ঘন্টা পর্যন্ত জলের হার্ডনেস
বাড়তে থাকে ।
৭) জল ভালো করে ফুটিয়ে নিয়ে অর্থাৎ বয়েল করে নিলে জলের হার্ড নেস অনেকটা কমে যায় । জল ভালো করে বয়েল করে ঠাণ্ডা হতে দেবেন , তারপর উপর থেকে পরিস্কার জল টা নিয়ে নেবেন থিতিয়ে যাওয়া জলের কষ ফেলে দেবেন ।
৭) জল ভালো করে ফুটিয়ে নিয়ে অর্থাৎ বয়েল করে নিলে জলের হার্ড নেস অনেকটা কমে যায় । জল ভালো করে বয়েল করে ঠাণ্ডা হতে দেবেন , তারপর উপর থেকে পরিস্কার জল টা নিয়ে নেবেন থিতিয়ে যাওয়া জলের কষ ফেলে দেবেন ।
kon jole fish rakhle valo hoi???
ReplyDeletejosss bro, সুন্দর পোষ্ট । ভালো লাগলো । ধন্যবাদ আপনাকে । বগুড়ার বিখ্যাত দই এবং ৫০+ রকমের সু-স্বাদু মিষ্টি নিয়ে এই সাইটটি দেখতে পারেন ।
ReplyDelete"অনলাইন দই & মিষ্টি সার্ভিস"