অ্যালবিনো টাইগার বার্ব ( albino tiger barb )
বার্বাস টেট্রাজোনা
অ্যালবিনো টাইগার বার্ব এর প্রাপ্তি স্তান কোথায় ( origins ) ? এই মাছ টাইগার বার্বএর ই একটি অন্য রং । এই রঙের মাছ প্রকৃতি তে পাওয়া যায় না এই রঙের টাইগার বার্ব বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে তৈয়ারি করা হয়েছে ।
অ্যালবিনো টাইগার বার্ব মাছ কত ধরনের পাওয়া যায় ( species) ? এই মাছ লালচে সাদা , গোল্ডেন সাদা , ইত্যাদি দেখতে পাওয়া যায় ।
অ্যালবিনো টাইগার বার্ব মাছ কত দিন বাঁচে ( life span ) ? এই মাছ আমার অভিজ্ঞতায় ৬ বৎসর পর্যন্ত বেঁচে থাকতে দেখেছি । মনে রাখবেন যত বড় অ্যাকুরিয়ামে এই মাছ রাখবেন মাছের আয়ু ও তত বেশি দিন হবে ।
অ্যালবিনো টাইগার বার্ব মাছ কত বড় হয় ( size ) ? এই মাছ প্রায় ৩ ইঞ্চি পর্যন্ত বড় হয় ।
অ্যালবিনো টাইগার বার্ব মাছের স্বভাব এবং প্রকৃতি কেমন হয় ( habit and nature ) : এই মাছ একটু চঞ্চল প্রকৃতির হয় । সব সময় জলের উপরি ভাগ থেকে তলা পর্যন্ত , এদিক থেকে ওদিক ব্যাস্ত ভাবে ঘুরে বেড়ায় । সাধারনত আক্রমণাত্মক নয় তবে মাঝে মাঝে অন্য মাছকে কামড়ে বেড়ায় । আমার অভিজ্ঞতায় দেখেছি এই মাছ ৬/৭ টি একসঙ্গে রাখলে খুব শান্ত ভাবে থাকে ,কিন্তু যদি একটি বা দুটি মাছ বিশেষ করে ১ টি যদি রাখা হয় তাহলে ভীষণ আক্রমণাত্মক হয় । জ্যান্ত গাছ খুব ভালবাসে ,এই মাছ দল বেঁধে ঘোরে ।
অ্যালবিনো টাইগার বার্ব মাছ এর সঙ্গে কোন কোন মাছ রাখা যায় ( compatible) ? এই মাছের সঙ্গে যে সমস্ত মাছ গুলি ভালো ভাবে রাখা যায় সেগুলি হল ১) অন্য যে কোন টাইগার বার্ব ২) যে কোন মলি ৩) যে কোন প্লাটি ৪) খুব ছোট জাতের টেট্রা বাদে যে কোন টেট্রা ৫) যে কোন ছোট জাতের সার্ক ৬) ছোট জাতের ক্যাট ফিশ ৭) যে কোন গোরামি ৮) যে কোন রেইনবো জাতের মাছ ৯) কিছু কিছু সিক লিড যেমন রেমি রেসি , ক্রিবেন্সিস ইত্যাদি ।
অ্যালবিনো টাইগার বার্ব মাছের সঙ্গে কোন কোন মাছ রাখা উচিত নয় ( not compatible ) ? এই মাছের সঙ্গে যে সমস্ত মাছ গুলি রাখা যায় না সেগুলি হল ১) গোল্ড ফিশ , ২) এঞ্জেল , ৩) গাপ্পি , ৪) কার্প ,৫) যে কোন বড় সার্ক ,৬) যে কোন বড়
অ্যালবিনো টাইগার বার্ব মাছের মেজাজ মর্জি কেমন হয় ( temperament ) ? এই মাছ সাধারনত সামাজিক ,মাঝে মাঝে আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে। তবে সংখ্যায় বেশি থাকলে এই মাছ সাধারনত মারা মারি করেনা ।
অ্যালবিনো টাইগার বার্ব মাছ কি খায় ( foods and feeding ) ? এই মাছ জ্যান্ত এবং শুকনো দুই ধরনের খাবার ই খেতে পছন্দ করে । জ্যান্ত খাবারের মধ্যে কেঁচো , ব্লাড ওয়ার্ম , মশার লার্ভা , ছোট চিংড়ি মাছ ইত্যাদি । যে কোন শুকনো খাবার প্যালেট ফুড , ফ্লেক ফুড , যে কোন ফ্রিজ ড্রাই করা খাবার ।
অ্যালবিনো টাইগার বার্ব মাছ এর ধাঁচ এবং স্বাস্থ ( type/ health ) ? এই মাছ বেশ শক্ত পোক্ত । জল পরিস্কার এবং জলে অক্সিজেনের অভাব না থাকলে ,সহজে অসুস্থ হয় না ।
অ্যালবিনো টাইগার বার্ব মাছের কত তাপমাত্রা দরকার হয় ( temperature ) ? এই মাছের প্রয়োজনীয় তাপমাত্রা হল ২২ থেকে ২৮ ডিগ্রি সেন্টি গ্রেড। তবে এই মাছ ৩০ ডিগ্রি পর্যন্ত তাপমাত্রা সহ্য করতে পারে ।
অ্যালবিনো টাইগার বার্ব মাছের জন্য কত ( ph ) দরকার হয় ? এই মাছ একটু অ্যাসিটিক জল পছন্দ করে , তাই এই মাছের জন্য ৬ থেকে ৬.৫ পি এইচ এর জল ভালো।
অ্যালবিনো টাইগার বার্ব মাছের কি ধরনের জল প্রয়োজন হয় ( water condition ) ? এই মাছ একটু soft জল পছন্দ করে , এই মাছ রাখার জন্য জলের হার্ড নেস ২০ থেকে ১০০ মিলি গ্রাম প্রতি লিটার, থাকা ভাল ।
অ্যালবিনো টাইগার বার্ব মাছ রাখার জন্য অ্যাকুরিয়ামে কি ধরনের পাথর ( substrate ) ব্যাবহার করা ভাল ? এই মাছের জন্য যে কোন ধরনের পাথর ব্যাবহার করা যায় , তবে একটু ছোট সাইজের পাথর বা বালি ব্যাবহার করা সব থেকে ভাল ।
অ্যালবিনো টাইগার বার্ব মাছের জন্য কত বড় অ্যাকুরিয়াম দরকার হয় ( aquarium size ): এই মাছ রাখার জন্য অন্তত ৪০ লিটার জল ধরে এমন সাইজের ট্যাঙ্ক বা এর চেয়ে বড় । ট্যাঙ্কের লম্বা অন্তত ১৮ ইঞ্চি হওয়া দরকার ।
অ্যালবিনো টাইগার বার্ব মাছের জন্য কি ধরনের আলো প্রয়োজন ( lightning ) ? এই মাছের জন্য যে কোন ধরনের আলো ব্যাবহার করা যায় । তবে সন্ধ্যা বেলায় বা রাত্রি বেলায় একটু মৃদু আলোয় এই মাছ দেখতে অপূর্ব লাগে ।আপনি সি এফ এল , এল ই ডি , বা অ্যাকুরিয়ামের দোকান থেকে ভালো লাইট এনে ব্যাবহার করতে পারেন।
অ্যালবিনো টাইগার বার্ব মাছ রাখার জন্য অ্যাকুরিয়ামে কি ধরনের ফিল্টার ব্যাবহার করা ভাল ( filtration ) ? এই মাছ রাখার জন্য আপনি ভাল কর্নার ফিল্টার , স্পঙ্গে ফিল্টার , পাওয়ার ফিল্টার , হ্যাং অন ফিল্টার ,ওভার হেড ফিল্টার ,এর যে কোন একটি বা দুটি ফিল্টার এক সাথে ব্যাবহার করতে পারেন ।
অ্যালবনো টাইগার বার্ব এর অ্যাকুরিয়ামের জলে স্রোত দরকার হয় কি ( water flow ) ? হ্যাঁ
অ্যালবিনো টাইগার বার্ব এর অ্যাকুরিয়ামের জল পাল্টাবার নিয়ম কি ( water change ) ? এই মাছ রাখলে ১৫ দিন অন্তর ২৫/৩০ ভাগ জল পালটে দেওয়া খুব ভাল । মনে রাখবেন যে জল দিয়ে বদল করবেন সেই জল যেন অন্তত ২ দিনের বাসি হয় এবং এক ই তাপমাত্রার হয়।না হলে এই মাছ অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে । যদি অ্যাকুরিয়াম থেকে মাছ তুলে জল পাল্টান, তাহলে খেয়াল রাখবেন, যে জলে মাছ তুলে রাখবেন সেই জলে অবশ্যই এয়ার পাম্প চালিয়ে রাখবেন ।
অ্যালবিনো টাইগার বার্ব মাছের ছেলে মেয়ে চেনার উপায় কি ( male/ female ) ? এই জাতের ছেলে মাছ গুলি মেয়ে মেয়ে মাছের থেকে রং বেশি গাড় হয় । মেয়ে মাছের চেহারা ছেলে মাছের থেকে একটু বেসি চওড়া এবং মোটা হয় । মাছ প্রাপ্ত বয়স্ক হলে ছেলে মাছ গুলির মুখ এবং নাক গাড় লাল রঙের হয়। এই মাছের ছেলে মেয়ে তফাৎ করার জন্য এটা খুব ভাল চিহ্ন।
অ্যালবিনো টাইগার বার্ব মাছের বাচ্চা ওঠাবার পদ্ধতি কি ( breeding process) ? এই মাছের বাচ্চা তোলার জন্য কম পক্ষে ১৫০ লিটার জল ধারন ক্ষমতা র একটি ট্যাঙ্কে জল ভরে অন্তত ২ দিন বাসি করুন । ওই জলে কিছু জ্যান্ত গাছ ( অ্যাকুরিয়াম এর গাছ ) ভাসিয়ে দিন। না পেলে নাইলনের মপ ভাসিয়ে দিন । ভাল ডিম এবং ডিমের ভাল ফার্টিলাইজেসন এর জন্য কমপক্ষে ১০/১২ টি ভাল প্রাপ্ত বয়স্ক মাছ ছাড়ুন । এর মধ্যে যেন ৫/৬ টি পেটে ডিম ভর্তি মেয়ে মাছ মাছ এবং বাকি গুলি সবল সতেজ ছেলে মাছ হয় । ওই ট্যাঙ্কে একটি পাওয়ার ফিল্টার চালিয়ে দিন। পরের দিন ভোর বেলা মাছ গুলি ওই গাছের গায়ে বা মপ এর গায়ে ডিম পারবে । দেখ লেই বুঝতে পারবেন মাছগুলি এক সাথে একে অপরের পিছন পিছন হুটো পুটি করে গাছের গায়ে বা মপ এর গায়ে ঠেলে উঠে ডিম পাড়তে থাকবে । ডিম পাড়া হয়ে গেলে মাছগুলি হুটি পুটি করা বন্ধ করে দেবে এবং এর ২/৪ মিনিটের মধ্যে নিজেরাই ডিম গুলো খেতে সুরু করে দেবে। এই সময় একটি বড় ফাঁকের জাল দিয়ে মাছ গুলি তুলে নিতে হবে । পাওয়ার ফিল্টার বন্ধ করে দিয়ে একটি এয়ার পাম্প এর দ্বারা একটি সাধারন অক্সিজেন স্টোন চালিয়ে দেবেন নাহলে পাওয়ার ফিল্টার ডিম গুলি টেনে নিয়ে নস্ট করে দেবে । সাধারনত ২৪ থেকে ৩৬ ঘন্টার মধ্যে ডিম ফুটে যায়। ১ দিন পরে খুব অল্প করে ইনফিউজোরিয়া খেতে দিতে হবে ।আরও ২ দিন পরে খুব মিহি করে ছাঁকা ডাফনিয়া খেতে দিতে হবে । প্রথম দিকে বাচ্চা এত ছোট থাকে যে ভাল করে চোখেই দেখা যায় না । বাচ্চা একটু বড় হলে একটু বড় ডাফনিয়া খেতে দিতে হবে ।ভাল করে দেখবেন আপনি যে সাইজের খাবার দিচ্ছেন তা যেন বাচ্চারা খেতে পারে । আপনি আরটিমিয়া অথবা ব্রাইন স্রিম্প এর ডিম ফুটিয়েও খেতে দিতে পারেন ।
অ্যালবিনো টাইগার বার্ব মাছের কি কি রোগ/ অসুখ বেশি হয় এবং এর প্রতিকার কি ( disease and treatment ) ? এই মাছের যে সমস্ত রোগ গুলি বেশি হয় সেগুলি হল ১) হোয়াইট স্পট , ২) ফাঙ্গাস ,৩ লেজ পচা বা পাখনা পচা রোগ
১) হোয়াইট স্পট ঃ এই রোগ হলে মাছের গায়ে ছোট ছোট সাদা সাদা বিন্দু বিন্দু দাগ দেখতে পাওয়া যায় ।এই রোগ খুব ছোঁয়াচে , মাছ জলের মধ্যে ছটফট করে বেরায় , খাওয়া বন্ধ করে দেয় ,মাছ ঝিমিয়ে পরে এবং মারা জায়।
প্রতিকার ঃ এই রোগ হলে প্রথমেই একটি ভাল হিটার লাগিয়ে ,জলের তাপমাত্রা বাড়িয়ে ৩০/৩১ডিগ্রি সেন্টী গ্রেড এ নিয়ে আসুন। ১০ গ্রাম প্রতি ১০ লিটার প্রতি মেরিন সল্ট অথবা সন্ধক লবন ব্যাবহার করুন । এর সঙ্গে যে কোন ভালো অ্যান্টি হোয়াইট স্পট মেডিসিন পরিমান মত ব্যাবহার করুন ।
২) ফাঙ্গাস ঃ এই রোগ হলে মাছের গায়ে সাদা ছত্রাক এর মত দাগ বা ঘা দেখতে পাওয়া যায় । মাছ ঝিমিয়ে পরে , জলের উপরি ভাগে বা একদম নিচে চুপ করে বসে থাকে নরা চড়া করতে চায় না ,খাওয়া বন্ধ করে দেয় । সঠিক সময়ে চিকিৎসা না করলে মাছ মারা যাবেই।
প্রতিকার ঃ এই রোগ হলে প্রথমে জল পরিস্কার করে দিন এবংফিল্টার পরিস্কার করে দেবেন। এর পরে ভালো অ্যান্টি ফাঙ্গাস মেডিসিন ব্যাবহার করুন পরিমান মত । মনে রাখবেন জলের তাপমাত্রা ২৬ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড এর নিচে না থাকলে ভুলেও হিটার চালাবেন না জলের তাপ মাত্রা ২৬ ডিগ্রির নিচে থাকলে তবেই হিটার চালাবেন । জলে নুন দিলে খুব কম পরিমানে ৫ গ্রাম ৩০ লিটার জলে দিতে পারেন ।জল অবশ্যই ২ দিনের বাসি ব্যাবহার করবেন ।
৩) লেজ পচা বা পাখনা পচা রোগ ঃ এই রোগ হলে অ্যাকুরিয়ামের জল ৮০ ভাগ বদল করবেন , ফিল্টার ভাল করে পরিস্কার করে দেবেন । তার পর ভাল অ্যান্টী ফাঙ্গাস ওষুধ পরিমান মত ব্যাবহ্র করুন ।
অ্যালবিনো টাইগার বার্ব মাছ ভালো রাখার জন্য জরুরি কিছু পরামর্শ ( tips )
১) জল পরিস্কার রাখুন
২) অতিরিক্ত খাবার দেবেন না ।
৩)জ্যান্ত গাছ লাগান ।
৪) অ্যাকুরিয়ামে সঠিক সংখ্যায় মাছ রাখুন ।
৫) প্লাস্টিক গাছ ব্যাবহার করবেন না
৬) বিশেষ করে বর্ষা কালে এবং শীত কালে অক্সিজেন এর পরিমান ঠিক রাখুন । ঠাণ্ডা লাগা এই মাছের ভীষণ ক্ষতি করে ।
অ্যালবিনো টাইগার বার্ব এর প্রাপ্তি স্তান কোথায় ( origins ) ? এই মাছ টাইগার বার্বএর ই একটি অন্য রং । এই রঙের মাছ প্রকৃতি তে পাওয়া যায় না এই রঙের টাইগার বার্ব বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে তৈয়ারি করা হয়েছে ।
অ্যালবিনো টাইগার বার্ব মাছ কত ধরনের পাওয়া যায় ( species) ? এই মাছ লালচে সাদা , গোল্ডেন সাদা , ইত্যাদি দেখতে পাওয়া যায় ।
অ্যালবিনো টাইগার বার্ব মাছ কত দিন বাঁচে ( life span ) ? এই মাছ আমার অভিজ্ঞতায় ৬ বৎসর পর্যন্ত বেঁচে থাকতে দেখেছি । মনে রাখবেন যত বড় অ্যাকুরিয়ামে এই মাছ রাখবেন মাছের আয়ু ও তত বেশি দিন হবে ।
অ্যালবিনো টাইগার বার্ব মাছ কত বড় হয় ( size ) ? এই মাছ প্রায় ৩ ইঞ্চি পর্যন্ত বড় হয় ।
অ্যালবিনো টাইগার বার্ব মাছের স্বভাব এবং প্রকৃতি কেমন হয় ( habit and nature ) : এই মাছ একটু চঞ্চল প্রকৃতির হয় । সব সময় জলের উপরি ভাগ থেকে তলা পর্যন্ত , এদিক থেকে ওদিক ব্যাস্ত ভাবে ঘুরে বেড়ায় । সাধারনত আক্রমণাত্মক নয় তবে মাঝে মাঝে অন্য মাছকে কামড়ে বেড়ায় । আমার অভিজ্ঞতায় দেখেছি এই মাছ ৬/৭ টি একসঙ্গে রাখলে খুব শান্ত ভাবে থাকে ,কিন্তু যদি একটি বা দুটি মাছ বিশেষ করে ১ টি যদি রাখা হয় তাহলে ভীষণ আক্রমণাত্মক হয় । জ্যান্ত গাছ খুব ভালবাসে ,এই মাছ দল বেঁধে ঘোরে ।
অ্যালবিনো টাইগার বার্ব মাছ এর সঙ্গে কোন কোন মাছ রাখা যায় ( compatible) ? এই মাছের সঙ্গে যে সমস্ত মাছ গুলি ভালো ভাবে রাখা যায় সেগুলি হল ১) অন্য যে কোন টাইগার বার্ব ২) যে কোন মলি ৩) যে কোন প্লাটি ৪) খুব ছোট জাতের টেট্রা বাদে যে কোন টেট্রা ৫) যে কোন ছোট জাতের সার্ক ৬) ছোট জাতের ক্যাট ফিশ ৭) যে কোন গোরামি ৮) যে কোন রেইনবো জাতের মাছ ৯) কিছু কিছু সিক লিড যেমন রেমি রেসি , ক্রিবেন্সিস ইত্যাদি ।
অ্যালবিনো টাইগার বার্ব মাছের সঙ্গে কোন কোন মাছ রাখা উচিত নয় ( not compatible ) ? এই মাছের সঙ্গে যে সমস্ত মাছ গুলি রাখা যায় না সেগুলি হল ১) গোল্ড ফিশ , ২) এঞ্জেল , ৩) গাপ্পি , ৪) কার্প ,৫) যে কোন বড় সার্ক ,৬) যে কোন বড়
অ্যালবিনো টাইগার বার্ব মাছের মেজাজ মর্জি কেমন হয় ( temperament ) ? এই মাছ সাধারনত সামাজিক ,মাঝে মাঝে আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে। তবে সংখ্যায় বেশি থাকলে এই মাছ সাধারনত মারা মারি করেনা ।
অ্যালবিনো টাইগার বার্ব মাছ কি খায় ( foods and feeding ) ? এই মাছ জ্যান্ত এবং শুকনো দুই ধরনের খাবার ই খেতে পছন্দ করে । জ্যান্ত খাবারের মধ্যে কেঁচো , ব্লাড ওয়ার্ম , মশার লার্ভা , ছোট চিংড়ি মাছ ইত্যাদি । যে কোন শুকনো খাবার প্যালেট ফুড , ফ্লেক ফুড , যে কোন ফ্রিজ ড্রাই করা খাবার ।
অ্যালবিনো টাইগার বার্ব মাছ এর ধাঁচ এবং স্বাস্থ ( type/ health ) ? এই মাছ বেশ শক্ত পোক্ত । জল পরিস্কার এবং জলে অক্সিজেনের অভাব না থাকলে ,সহজে অসুস্থ হয় না ।
অ্যালবিনো টাইগার বার্ব মাছের কত তাপমাত্রা দরকার হয় ( temperature ) ? এই মাছের প্রয়োজনীয় তাপমাত্রা হল ২২ থেকে ২৮ ডিগ্রি সেন্টি গ্রেড। তবে এই মাছ ৩০ ডিগ্রি পর্যন্ত তাপমাত্রা সহ্য করতে পারে ।
অ্যালবিনো টাইগার বার্ব মাছের জন্য কত ( ph ) দরকার হয় ? এই মাছ একটু অ্যাসিটিক জল পছন্দ করে , তাই এই মাছের জন্য ৬ থেকে ৬.৫ পি এইচ এর জল ভালো।
অ্যালবিনো টাইগার বার্ব মাছের কি ধরনের জল প্রয়োজন হয় ( water condition ) ? এই মাছ একটু soft জল পছন্দ করে , এই মাছ রাখার জন্য জলের হার্ড নেস ২০ থেকে ১০০ মিলি গ্রাম প্রতি লিটার, থাকা ভাল ।
অ্যালবিনো টাইগার বার্ব মাছ রাখার জন্য অ্যাকুরিয়ামে কি ধরনের পাথর ( substrate ) ব্যাবহার করা ভাল ? এই মাছের জন্য যে কোন ধরনের পাথর ব্যাবহার করা যায় , তবে একটু ছোট সাইজের পাথর বা বালি ব্যাবহার করা সব থেকে ভাল ।
অ্যালবিনো টাইগার বার্ব মাছের জন্য কত বড় অ্যাকুরিয়াম দরকার হয় ( aquarium size ): এই মাছ রাখার জন্য অন্তত ৪০ লিটার জল ধরে এমন সাইজের ট্যাঙ্ক বা এর চেয়ে বড় । ট্যাঙ্কের লম্বা অন্তত ১৮ ইঞ্চি হওয়া দরকার ।
অ্যালবিনো টাইগার বার্ব মাছের জন্য কি ধরনের আলো প্রয়োজন ( lightning ) ? এই মাছের জন্য যে কোন ধরনের আলো ব্যাবহার করা যায় । তবে সন্ধ্যা বেলায় বা রাত্রি বেলায় একটু মৃদু আলোয় এই মাছ দেখতে অপূর্ব লাগে ।আপনি সি এফ এল , এল ই ডি , বা অ্যাকুরিয়ামের দোকান থেকে ভালো লাইট এনে ব্যাবহার করতে পারেন।
অ্যালবিনো টাইগার বার্ব মাছ রাখার জন্য অ্যাকুরিয়ামে কি ধরনের ফিল্টার ব্যাবহার করা ভাল ( filtration ) ? এই মাছ রাখার জন্য আপনি ভাল কর্নার ফিল্টার , স্পঙ্গে ফিল্টার , পাওয়ার ফিল্টার , হ্যাং অন ফিল্টার ,ওভার হেড ফিল্টার ,এর যে কোন একটি বা দুটি ফিল্টার এক সাথে ব্যাবহার করতে পারেন ।
অ্যালবনো টাইগার বার্ব এর অ্যাকুরিয়ামের জলে স্রোত দরকার হয় কি ( water flow ) ? হ্যাঁ
অ্যালবিনো টাইগার বার্ব এর অ্যাকুরিয়ামের জল পাল্টাবার নিয়ম কি ( water change ) ? এই মাছ রাখলে ১৫ দিন অন্তর ২৫/৩০ ভাগ জল পালটে দেওয়া খুব ভাল । মনে রাখবেন যে জল দিয়ে বদল করবেন সেই জল যেন অন্তত ২ দিনের বাসি হয় এবং এক ই তাপমাত্রার হয়।না হলে এই মাছ অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে । যদি অ্যাকুরিয়াম থেকে মাছ তুলে জল পাল্টান, তাহলে খেয়াল রাখবেন, যে জলে মাছ তুলে রাখবেন সেই জলে অবশ্যই এয়ার পাম্প চালিয়ে রাখবেন ।
অ্যালবিনো টাইগার বার্ব মাছের ছেলে মেয়ে চেনার উপায় কি ( male/ female ) ? এই জাতের ছেলে মাছ গুলি মেয়ে মেয়ে মাছের থেকে রং বেশি গাড় হয় । মেয়ে মাছের চেহারা ছেলে মাছের থেকে একটু বেসি চওড়া এবং মোটা হয় । মাছ প্রাপ্ত বয়স্ক হলে ছেলে মাছ গুলির মুখ এবং নাক গাড় লাল রঙের হয়। এই মাছের ছেলে মেয়ে তফাৎ করার জন্য এটা খুব ভাল চিহ্ন।
অ্যালবিনো টাইগার বার্ব মাছের বাচ্চা ওঠাবার পদ্ধতি কি ( breeding process) ? এই মাছের বাচ্চা তোলার জন্য কম পক্ষে ১৫০ লিটার জল ধারন ক্ষমতা র একটি ট্যাঙ্কে জল ভরে অন্তত ২ দিন বাসি করুন । ওই জলে কিছু জ্যান্ত গাছ ( অ্যাকুরিয়াম এর গাছ ) ভাসিয়ে দিন। না পেলে নাইলনের মপ ভাসিয়ে দিন । ভাল ডিম এবং ডিমের ভাল ফার্টিলাইজেসন এর জন্য কমপক্ষে ১০/১২ টি ভাল প্রাপ্ত বয়স্ক মাছ ছাড়ুন । এর মধ্যে যেন ৫/৬ টি পেটে ডিম ভর্তি মেয়ে মাছ মাছ এবং বাকি গুলি সবল সতেজ ছেলে মাছ হয় । ওই ট্যাঙ্কে একটি পাওয়ার ফিল্টার চালিয়ে দিন। পরের দিন ভোর বেলা মাছ গুলি ওই গাছের গায়ে বা মপ এর গায়ে ডিম পারবে । দেখ লেই বুঝতে পারবেন মাছগুলি এক সাথে একে অপরের পিছন পিছন হুটো পুটি করে গাছের গায়ে বা মপ এর গায়ে ঠেলে উঠে ডিম পাড়তে থাকবে । ডিম পাড়া হয়ে গেলে মাছগুলি হুটি পুটি করা বন্ধ করে দেবে এবং এর ২/৪ মিনিটের মধ্যে নিজেরাই ডিম গুলো খেতে সুরু করে দেবে। এই সময় একটি বড় ফাঁকের জাল দিয়ে মাছ গুলি তুলে নিতে হবে । পাওয়ার ফিল্টার বন্ধ করে দিয়ে একটি এয়ার পাম্প এর দ্বারা একটি সাধারন অক্সিজেন স্টোন চালিয়ে দেবেন নাহলে পাওয়ার ফিল্টার ডিম গুলি টেনে নিয়ে নস্ট করে দেবে । সাধারনত ২৪ থেকে ৩৬ ঘন্টার মধ্যে ডিম ফুটে যায়। ১ দিন পরে খুব অল্প করে ইনফিউজোরিয়া খেতে দিতে হবে ।আরও ২ দিন পরে খুব মিহি করে ছাঁকা ডাফনিয়া খেতে দিতে হবে । প্রথম দিকে বাচ্চা এত ছোট থাকে যে ভাল করে চোখেই দেখা যায় না । বাচ্চা একটু বড় হলে একটু বড় ডাফনিয়া খেতে দিতে হবে ।ভাল করে দেখবেন আপনি যে সাইজের খাবার দিচ্ছেন তা যেন বাচ্চারা খেতে পারে । আপনি আরটিমিয়া অথবা ব্রাইন স্রিম্প এর ডিম ফুটিয়েও খেতে দিতে পারেন ।
অ্যালবিনো টাইগার বার্ব মাছের কি কি রোগ/ অসুখ বেশি হয় এবং এর প্রতিকার কি ( disease and treatment ) ? এই মাছের যে সমস্ত রোগ গুলি বেশি হয় সেগুলি হল ১) হোয়াইট স্পট , ২) ফাঙ্গাস ,৩ লেজ পচা বা পাখনা পচা রোগ
১) হোয়াইট স্পট ঃ এই রোগ হলে মাছের গায়ে ছোট ছোট সাদা সাদা বিন্দু বিন্দু দাগ দেখতে পাওয়া যায় ।এই রোগ খুব ছোঁয়াচে , মাছ জলের মধ্যে ছটফট করে বেরায় , খাওয়া বন্ধ করে দেয় ,মাছ ঝিমিয়ে পরে এবং মারা জায়।
প্রতিকার ঃ এই রোগ হলে প্রথমেই একটি ভাল হিটার লাগিয়ে ,জলের তাপমাত্রা বাড়িয়ে ৩০/৩১ডিগ্রি সেন্টী গ্রেড এ নিয়ে আসুন। ১০ গ্রাম প্রতি ১০ লিটার প্রতি মেরিন সল্ট অথবা সন্ধক লবন ব্যাবহার করুন । এর সঙ্গে যে কোন ভালো অ্যান্টি হোয়াইট স্পট মেডিসিন পরিমান মত ব্যাবহার করুন ।
২) ফাঙ্গাস ঃ এই রোগ হলে মাছের গায়ে সাদা ছত্রাক এর মত দাগ বা ঘা দেখতে পাওয়া যায় । মাছ ঝিমিয়ে পরে , জলের উপরি ভাগে বা একদম নিচে চুপ করে বসে থাকে নরা চড়া করতে চায় না ,খাওয়া বন্ধ করে দেয় । সঠিক সময়ে চিকিৎসা না করলে মাছ মারা যাবেই।
প্রতিকার ঃ এই রোগ হলে প্রথমে জল পরিস্কার করে দিন এবংফিল্টার পরিস্কার করে দেবেন। এর পরে ভালো অ্যান্টি ফাঙ্গাস মেডিসিন ব্যাবহার করুন পরিমান মত । মনে রাখবেন জলের তাপমাত্রা ২৬ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড এর নিচে না থাকলে ভুলেও হিটার চালাবেন না জলের তাপ মাত্রা ২৬ ডিগ্রির নিচে থাকলে তবেই হিটার চালাবেন । জলে নুন দিলে খুব কম পরিমানে ৫ গ্রাম ৩০ লিটার জলে দিতে পারেন ।জল অবশ্যই ২ দিনের বাসি ব্যাবহার করবেন ।
৩) লেজ পচা বা পাখনা পচা রোগ ঃ এই রোগ হলে অ্যাকুরিয়ামের জল ৮০ ভাগ বদল করবেন , ফিল্টার ভাল করে পরিস্কার করে দেবেন । তার পর ভাল অ্যান্টী ফাঙ্গাস ওষুধ পরিমান মত ব্যাবহ্র করুন ।
অ্যালবিনো টাইগার বার্ব মাছ ভালো রাখার জন্য জরুরি কিছু পরামর্শ ( tips )
১) জল পরিস্কার রাখুন
২) অতিরিক্ত খাবার দেবেন না ।
৩)জ্যান্ত গাছ লাগান ।
৪) অ্যাকুরিয়ামে সঠিক সংখ্যায় মাছ রাখুন ।
৫) প্লাস্টিক গাছ ব্যাবহার করবেন না
৬) বিশেষ করে বর্ষা কালে এবং শীত কালে অক্সিজেন এর পরিমান ঠিক রাখুন । ঠাণ্ডা লাগা এই মাছের ভীষণ ক্ষতি করে ।
Comments
Post a Comment